জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত সদস্যগণ বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যে আত্মত্যাগ করেছেন তা স্মরণীয় করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী ২৯ শে মে তারিখে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা দিবস পালন করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও পুলিশের যে সকল সদস্য জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে দায়িত্ব পালন কালে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ কিংবা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্তে আজ শনিবার (২৯ মে) সকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিলেট এরিয়া ও ১৭ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২১ উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে সিলেট সেনানিবাসে Peacekeeper’s Commemoration অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সিলেট এরিয়ার সামরিক সদস্যগণ ও পদস্থ অসামরিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি,সাংবাদিক ও স্থানীয় ইউএন প্রতিনিধি সহ অন্যান্য সংস্হার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার।এসময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও বাংলাদেশ পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, ৩৩ বছর ধরে পেশাদারিত্ব, কর্তব্য নিষ্ঠা ও অভিজ্ঞতার কারণে আজ বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীগন বিশ্ব শান্তি রক্ষায় আদর্শ হিসেবে স্বীকৃত।
তিনি আরো বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শিতা, সংবিধানের দিকনির্দেশনা, মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুপ্রেরণা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের শান্তিরক্ষীদের অবদান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন বাংলাদেশ বিশ্বের শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে আজ সর্ববৃহৎ শান্তিরক্ষী বাহিনীর আসনে অধিষ্ঠিত। এসময় তিনি ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, সেনাবাহিনী প্রধানের সাম্প্রতিক সফরের ফলস্বরূপ মিশনের সদর দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের অন্তর্ভুক্তি আমাদের জন্য নি:সন্দেহে গৌরবের বিষয়। তিনি বলেন, বিশ্ব শান্তি রক্ষায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ শান্তি রক্ষী বাহিনী বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য সদা প্রস্তুত।
উল্লেখ্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ১৯৪৮ সাল হতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও বাংলাদেশে ১৯৮৮ সালের আগস্ট মাস থেকে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রয়াসের সাথে সম্পৃক্ত হয়। বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে মোট ১০ টি দেশে ৬৭৪৩ জন সামরিক ও পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছেন। অদ্যাবধি শান্তি রক্ষার এ সুহান দায়িত্বপালনকালে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ এর সর্বমোট ১৫৯ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং ২৪০ জন সদস্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।