সিএনবাংলা ডেস্ক:: করোনাকালে এনজিওর থেকে নেয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বগুড়ার ধুনটে গৃহবধূ শেফালী খাতুনের (৫২) সঙ্গে স্বামীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে শেফালীর স্বামী তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। রোববার (১১ অক্টোবর) সকালে শেফালীর স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, শনিবার রাত ১টার দিকে উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের পাঁচথুপি সরোয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গৃহবধূর শেফালী খাতুনের স্বামীর নাম এশারত আলী। ধুনট উপজেলার পাঁচথুপি সরোয়া গ্রামের তাদের বাড়ি।
পুলিশের ধারণা, স্ত্রীকে হত্যা করলে স্থানীয় এনজিও থেকে নেয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে না ভেবে তিনি খুন করেছেন।
পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, পাঁচথুপি সরোয়া গ্রামের এশারত আলী বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন আসবাব তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তাদের অভাবের সংসার। করোনাকালে তাদের সংসারে অভাব আরও বেড়েছে। এ কারণে দুই মাস আগে স্থানীয় একটি এনজিওর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন শেফালী খাতুন। প্রতি সপ্তাহে ৩০০ টাকা করে ওই ঋণের কিস্তি দিতে হয়। সোমবার সকালেও ৩০০ টাকা কিস্তি পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তাদের কাছে কোনো টাকা নেই। এ নিয়ে শনিবার রাতে শেফালী খাতুন ও এশারত আলীর মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। রাত ১টার দিকে স্ত্রীকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে এশারত আলী। খবর পেয়ে পুলিশ রোববার সকালে অভিযান চালিয়ে শেরপুর উপজেলার চান্দাইকোনা বগুড়া বাজার থেকে এশারতকে আটক করে। একই সময় এশারতের বাড়ি থেকে তার স্ত্রী শেফালী খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শেফালী খাতুনের বড় ছেলে সেলিম হোসেন বলেন, ঘরের ভেতর মাকে হত্যা করে দরজায় বসে ছিলেন বাবা এশারত। রক্তাক্ত অবস্থায় মাকে পড়ে থাকতে দেখে ঘরের ভেতর আমি ঢোকার চেষ্টা করি। এ সময় বাবা আমাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেন। পরে আমি আমার এক চাচাকে ডাকতে যাই। এ সময় আমার বাবা পালিয়ে যান।
পুলিশ দাবি করেছে, থানাহাজতে আটক এশারত আলী পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে এশারত জানিয়েছেন, তার স্ত্রী অসুস্থ। সে সঙ্গে তিনি ভেবেছিলেন, স্ত্রী না থাকলে হয়তো ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে না। সে জন্যই তিনি এ কাজ করেছেন।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, শেফালী খাতুন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসি কৃপা সিন্দু বালা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বলেন, অভাবের কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। করোনাকালে ছেলেরা খোঁজখবর নেয়নি, সংসারে অভাব আর এনজিও ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে সে
সিএনবাংলা/সাকিল