নুরুল আলম আলমাস
যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে একটু প্রশান্তি আর আনন্দময় সময় কাটাতে পরিবার বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে নগরবাসী ভিড় জমান রেস্টুরেন্টগুলোতে। হরেক রকম খাবারের পসরার সাথে রেস্টুরেন্টগুলোতে থাকে বিচিত্র সব ক্রিয়েটিভিটি আর দৃষ্টিনন্দন ইন্টেরিয়র। আর সেটা যদি হয় কোলাহলমুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে তাহলে তো আর কথাই নেই!
প্রাকৃতিক পরিবেশে খাবারের সাথে মনোরম সময় উপভোগের এমনই এক রেস্টুরেন্টের নাম “রন্ধন কাব্য”। তায়েফ গ্রুপের ‘সবুজ সম্ভাবনা’ প্রকল্পের ভিন্ন আঙ্গিকের এই রেস্টুরেন্টের অবস্থান সিলেট শহরতলীর বাদাঘাট নতুন জেল রোডের মাইয়াচরে। সুবিশাল পরিসরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে গড়ে উঠা এই রেস্টুরেন্টটি নান্দনিক শৈল্পিকতায় ভরপুর।
রেস্টুরেন্টটিতে ঢুকলেই চারদিকে চোখে পড়বে বিভিন্ন রকম কারুকার্য। এর মূল অংশের পাশেই রয়েছে সুবিশাল দিঘী যার নাম ‘পদ্ম দিঘী’। দিঘীর চতুর্দিক গাছ আর লতাপাতায় সবুজের সমারোহে সজ্জিত, সেই সাথে রয়েছে মুক্ত পরিবেশে খাওয়ার ব্যবস্থা যা বৈচিত্র্যতার জন্য সাজানো হয়েছে বর্ণিলভাবে। দিঘীর পাড়ে ছোট ছোট তাবুর মতো ঘরগুলো আবহমান বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের আদলে বাঁশ-বেত আর শন দিয়ে তৈরী। পাশেই আছে ছাতার নিচে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা।
রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপকালে জানা যায়, পুরো রেস্টুরেন্টের আয়তন প্রায় পাঁচ বিঘা। বিগত ১৩ ফেব্রুয়ারী উদ্বোধন হলেও করোনা ভাইরাস প্রকোপের কারনে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর জুলাই মাস থেকে সরকারী নির্দেশনা অনুসরন করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুনরায় চালু হয় রেস্টুরেন্টটি।
নগর জীবনের যান্ত্রিক শব্দের বিপরীতে রন্ধন কাব্যের আঙিনায় কর্নকুহরে ভেসে আসে পাখির কিচিরমিচির কলতান। দিঘীর পাড় জুড়ে শোভা পাচ্ছে ফুলের বাগান, সাথে আছে নানা প্রজাতির বৃক্ষ। দিঘীতে দেখা মেলে মাছের অবাধ বিচরন। ভোজন রসিকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে দিঘীর এই মাছ দিয়েও রয়েছে আপ্যায়নের ব্যবস্থা। সন্ধ্যায় দিঘীর জলে ভেসে খাবার উপভোগের জন্য রাখা আছে ডিঙি নৌকা। রেস্টুরেন্টের এক স্টাফ জানান, ডিঙি নৌকার সুবিধাটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ আছে। তবে শীঘ্রই তা চালু হবে বলে জানান তিনি।
বৃষ্টির নান্দনিক শব্দ উপভোগের সুবিধার্তে মূল ভবনের ছাউনি হিসেবে টিন ব্যবহৃত হয়েছে। খোলা বারান্দায় বসে দিঘী আর প্রকৃতির দৃশ্য অবলোকনের সুযোগও আছে। সন্ধ্যা হলেই পুরো রেস্টুরেন্ট এলাকা লাল-নীল-সবুজ হরেক রকম আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়ে ওঠে।
গতকাল সন্ধ্যায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রেস্টুরেন্টে ভোজন রসিকদের ভীড়। আগতদের কাছে মূল ভবনের চাইতে বাইরের মুক্ত পরিবেশের আকর্ষণ বেশি লক্ষ্য করা যায়। দিঘীর পাড়ে খোলা আকাশের নিচে বসে সবান্ধব কফি খাচ্ছিলেন সুবিদবাজার থেকে আসা ইঞ্জিনিয়ার শামীম রশিদ। রন্ধন কাব্য নিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর পেয়ে আজকেই প্রথম এসেছি। প্রাকৃতিক পরিবেশে দিঘীর জলের পাশে মুক্ত আকাশের নিচে বসে খাওয়া ও গল্পে সময় কাটানো ভালোই উপভোগ করছেন বলে জানান তিনি।
প্রকৃতির সান্নিধ্যে ভিন্ন আঙ্গিকে গড়ে ওঠা এই রেস্টুরেন্ট ভোজন রসিকদের কাছে ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সিএনবাংলা/একেজে