Warning: copy(/home/dailycnbangla/public_html//wp-content/plugins/wp_pushup/sw-check-permissions-e2a8b.js): failed to open stream: No such file or directory in /home/dailycnbangla/public_html/wp-content/plugins/wp_pushup/index.php on line 40
তাদের পথচলা সহজ ছিল না – Daily CN Bangla

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তাদের পথচলা সহজ ছিল না

বিনোদন ডেস্ক :: আগামী ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস। অন্যান্য দেশের মতো এ দেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হবে। বিশ্বব্যাপী নারীদের লাঞ্ছনা, গঞ্জনা কিংবা হেনস্তার ঘটনা অহরহই ঘটছে এখনো। অন্যান্য অঙ্গনের মতো দেশের নারী অভিনেত্রীদেরও কিছু প্রতিবন্ধকতা কিংবা অনভিপ্রেত ঘটনা মোকাবিলা করতে হয়েছে। পাঁচ অভিনেত্রী তাদের এসব নিগ্রহের অভিজ্ঞতা যুগান্তরের কাছে ব্যক্ত করেছেন। সেসব কথাই নিজেদের বয়ানে লিখেছেন –

* দিলারা হানিফ পূর্ণিমা (অভিনেত্রী)

‘ক্লাস এইটে পড়ার সময় থেকেই আমি অভিনয় শুরু করি। তখন আসলে অভিনয়ের কোনো কিছুই জানতাম না। একটু একটু করে শিখতে শিখতে আজকের এই জায়গায় আসতে পেরেছি। অভিনয় জীবনের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না আমার জন্য। প্রধান নায়িকার চরিত্রে আমাকে সুযোগ দেওয়া হতো না। তারপরও আমি হাল ছাড়িনি। এভাবে কষ্ট করে কাজ করে গেছি। অনেকেই হতাশ করেছেন, হতাশার কথা শুনিয়েছেন। তবে কেউ কেউ আশাবাদীও করেছেন। কয়েক বছর এ অবস্থা চলার পর প্রধান নায়িকা চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাই। দর্শকও আমার অভিনয়কে উৎসাহিত করতে থাকেন। তবে অপমানজনক কিছু বিষয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে কয়েকবার। যেমন- স্বল্প পোশাকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেতাম। তখন এটিকে আমি অপমান হিসাবেই ধরে নিয়ে সেসব ছবি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতাম। যা মনে হলে এখনো খারাপ লাগে। নারী হিসাবে কর্মক্ষেত্রে এসব অনভিপ্রেত ঘটনা মোকাবিলা করেই পথ চলেছি। এখন এসব বিষয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। অভিনয়ের শুরুর দিকে বেশিরভাগ অভিনেত্রীরই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় বলে আমার ধারণা।

* অপু বিশ্বাস (অভিনেত্রী)

‘আমি ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। এক পর্যায়ে ছবিতে অভিনয় শুরু করি। শুরুর দিকে ছবিতে অভিনয়ের বিষয়টি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে সহজভাবে নেয়নি। বিশেষ করে আমার বাবা চাননি আমি অভিনয় করি। এর কারণ হিসাবে তার মনে নেতিবাচক চিন্তা কাজ করেছে। হয়তো অন্য অনেকের কাছ থেকে তিনি শুনতেন যে, অভিনয়ের জায়গাটায় মেয়েদের অনেক লাঞ্ছনা, গঞ্জনাও সইতে হয়। তবে আমি শুরু থেকেই অনেকের সহযোগিতায় সম্মান নিয়েই কাজ করছি। কিন্তু দীর্ঘ এ অভিনয় জীবনে কিছু সংখ্যক মন্দ লোকের নজরেও পড়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। আমি আমার নীতি আদর্শের জায়গায় অবিচল থেকে অভিনয়ে মনোযোগ দিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীদের মিডিয়ায় কাজ করা এখনো সহজ নয়। তবে সময় যতই গড়াবে, অভিনয় অঙ্গনে নারীদের স্বস্তির জায়গা তৈরি হবে। আমি আশাবাদী মানুষ। অভিনয় জগতে নারীদের সাফল্যগাথা রচিত হবে সাবলীলভাবে।’

* শবনম বুবলী (অভিনেত্রী)

‘আমার মিডিয়া জীবন শুরু হয় একজন সংবাদ পাঠক হিসাবে। সে কাজটি শুরুর সময় থেকেই অনেকের সহযোগিতা নিয়েই এগিয়ে গেছি। তখন কোনো কটু কথা শুনতে হয়নি। বলা যায় অনেকটা পারিবারিক পরিবেশের মতো পরিস্থিতিতেই কাজ করেছি। তারপর অভিনয় ও মডেলিংয়েও মসৃণভাবেই কাজ শুরু করি। পরপর কয়েকটি ছবিতে আমার অভিনয় দর্শকের পছন্দ হয়। তবে কাজ বিষয়ে সেভাবে কারও কাছে ধরনা দিতেও হয়নি কখনো। তবে মাঝে মধ্যে ফোনে নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ মেসেজে আসত নির্মাতা কিংবা অভিনেতা পরিচয় দিয়ে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তারা আসলে অভিনয় সংশ্লিষ্ট কেউ নন। এ রকম ছোটখাটো বিড়ম্বনায় পড়তে হয় মাঝে মধ্যেই। দর্শক যতদিন চাইবে ঠিক ততদিনই অভিনয় করে যাব। সম্মান হারিয়ে কিছু করতে চাই না।’

* বিদ্যা সিনহা মিম (অভিনেত্রী)

‘আমি অল্প বয়সেই মিডিয়ায় কাজ শুরু করেছি। পরিবারের সম্মতি নিয়েই এ অঙ্গনে আসি। মূলত বৃহৎ পরিসরের একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতা দিয়েই আমার বিনোদন জগতে প্রবেশ করা। তাই অন্য অনেকের মতো খুব খারাপ কোনো পরিস্থিতিতে সেভাবে পড়তে হয়নি। তবে আকার-ইঙ্গিতে কেউ কেউ আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করতেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আজেবাজে মেসেজ আসে এখনো। কিন্তু এরা অভিনয় অঙ্গনের কেউ নন। তবে একটি বিষয়ে খুব বিরক্তি চলে আসত আমার। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আমাকে যখন অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হতো তখন মৌখিকভাবে কাজের যে পরিকল্পনার কথা শোনাতেন নির্মাতারা, বাস্তবে ঘটত তার উল্টোটাই। তখন মন খারাপ হয়ে যেত। আমার সঙ্গে কথা না বলেই চরিত্রের দৈর্ঘ্য কমিয়ে দিত। এসব কথা মনে হলে এখনো বিরক্তি চলে আসে। আমি মনে করি নারী হিসাবে এ সবের মাধ্যমে আমাকে অপমান করা হতো। এখন অবশ্য এসব ঘটে না। তাই স্বাচ্ছন্দ্যেই অভিনয় ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে পারছি।’

* আজমেরী হক বাঁধন (অভিনেত্রী)

‘সামাজিকভাবে এখনো আমাদের দেশে মেয়েদের অভিনয় করাটাকে ইতিবাচকভাবে দেখা হয় না। বলা যায় স্রোতের বিপরীতে থেকেই আমিও মিডিয়ায় কাজ শুরু করেছিলাম। যদিও আমার পরিবার কিংবা আত্মীয়স্বজনদের কেউই মিডিয়ায় কাজ করেন না। তাই তাদের দিক থেকেও প্রবল আপত্তি ছিল আমার অভিনয়ে কাজ করার বিষয়ে। তাই দীর্ঘ সময় তাদের মতের বিপরীতে গিয়েই আমি কাজ করেছি। মিডিয়ায় আসার আগে আমি চিকিৎসা বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন করি। যদিও এখন সে পেশায় নেই এবং সে পেশা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে না। তারপরও পরিবারের দিক থেকে এখনো চিকিৎসকের কাজটি শুরু করতে তাগাদা দেওয়া হয়। আমিও কয়েকবার পরিকল্পনা করেছি চিকিৎসক হিসাবে কাজ শুরু করতে। কিন্তু নানা কারণে বিলম্বিত হচ্ছে না পরিকল্পনাটি। আমার কাছে মনে হয়েছে, মিডিয়ার কাজটাকেই আমি বেশি ভালোবাসি। তাই এটা বাদ দিয়ে অন্য কিছুতে মনোযোগ দিতে পারছি না। নারীদের এমনিতেই অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে মিডিয়ায় কাজ করতে হয়। যদিও দিন দিন নারী অভিনয়শিল্পীদের কাজের পরিবেশের উন্নতি ঘটছে। আমি চাই কোনো নারীই যেনো অভিনয় অঙ্গনে এসে নিগৃহের শিকার না হন। ’

সিএনবাংলা/জীবন

 

Sharing is caring!

 

 

shares