সিএনবাংলা ডেস্ক :: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চাকরিচ্যুত এক শিক্ষক সংসারের অভাব অনটনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। স্বামীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার আগেই চিতার ওপর শুয়ে পড়েন স্ত্রী। স্বামী হারানো শোক সইতে না পেরে নিজেকেও পুড়িয়ে দেয়ার জন্য আত্মীয়দের অনুরোধ করেন ওই গৃহবধূ।
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার তৃষ্ণা গাঁওপঞ্চায়েত এলাকায় শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
খবরে বলা হয়, ত্রিপুরায় চাকরি হারানো ১০ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষক চাকরির দাবিতে আগরতলার প্যারাডাইস চৌমুহনীতে ৭ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
ত্রিপুরায় বাম আমলে এই শিক্ষকরা নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরে আইনি জটিলতায় চাকরি হারান তারা। তবে স্কুল পরিচালনার জন্য সুপ্রিমকোর্ট তাদের অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ করার অনুমতি দেয়।
ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি এই শিক্ষকদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু তারপরও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের।
এই শিক্ষকদের মধ্যে একজন ছিলেন উত্তম ত্রিপুরা (৩২)। চাকরি না থাকায় স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা-বাবা-বোনকে নিয়ে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছিলেন।
চাকরি ফিরে পেতে রাজ্য সরকারের পক্ষ কোনো প্রতিশ্রুতি না পেয়ে সম্প্রতি তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। এর মধ্যেই শুক্রবার রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন উত্তম।
শনিবার সকালে পুলিশ গিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়।
দুপুরে শেষকৃত্য হয়। চিতা সাজানো হয়েছিল গ্রামেই। কিন্তু স্বামীর শেষকৃত্যের আগেই তার ওপর শুয়ে পড়েন শেফালী। তিনি বলতে থাকেন, ‘যারা আমার স্বামীর মৃত্যুর জন্য, দায়ী তাদের বিচার করতে হবে। আমাকেও স্বামীর সঙ্গে একই চিতায় পুড়িয়ে ফেল তোমরা।’
আত্মীয়-স্বজনরা টেনে তাকে চিতা টেনে তুলে পারছিলেন না। শেফালীর একটাই কথা- স্বামীর আগে যেন তার গায়ে আগুন দেয়া হয়। পরে অনেক কষ্টে শেফালীকে চিতা টেনে তুলে আনা হয়।
সিএনবাংলা/জীবন