Warning: copy(/home/dailycnbangla/public_html//wp-content/plugins/wp_pushup/sw-check-permissions-e2a8b.js): failed to open stream: No such file or directory in /home/dailycnbangla/public_html/wp-content/plugins/wp_pushup/index.php on line 40
কলঙ্কিত আজ ঐতিহ্যের স্মারক এম.সি কলেজ : হৃদয়ে রক্তক্ষরণ! – Daily CN Bangla

 

 

 

 

 

 

 

 

 

কলঙ্কিত আজ ঐতিহ্যের স্মারক এম.সি কলেজ : হৃদয়ে রক্তক্ষরণ!

জুবায়ের আহমদ 

রাজা গিরিশ চন্দ্র রায় আজ পৃথিবীতে নেই। যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে রাগে ক্ষোভে দুঃখে বলে উঠতেন- “বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দাও ঐ ক্যাম্পাস, শশ্মানে পরিণত করে দাও সবুজ টিলা; ওখানে এখন আর মানুষ সৃষ্টি হবে না, জন্ম নেবে ধর্ষক সন্ত্রাসী মাকদসেবী আর খুনী”।

১৮৯২ সালের ২৭ জানুয়ারী সিলেটের রাজা গিরিশ চন্দ্র রায় পূণ্যভূমি সিলেটে জ্ঞানের আলো জ্বালাতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রমাতামহ মুরারিচাঁদের নামে কলেজটির নাম রাখেন মুরারিচাঁদ কলেজ যা সংক্ষেপে এম.সি কলেজ নামে পরিচিত। তখনও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়নি। এম.সি কলেজকেই তখন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো। সুনাম, সুখ্যাতি আর গৌরবের মহিমায় এমসি কলেজ ছিল দীপ্তমান।

আমি এই কলেজেরই ছাত্র ছিলাম। কারো কাছে পরিচয় দেবার সময় স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কোন কিছুরই নাম উল্লেখ না করে শুধু বলতাম আমি এম.সি কলেজের ছাত্র। খুব গর্ববোধ করতাম, আত্মতৃপ্তি পেতাম। সেই গর্ব, সেই কৃতিত্ব আজ ধুলোয় মিশে গেলো। এমসি কলেজের ছাত্র ছিলাম এ পরিচয় হয়তো আর কোনদিন দেবো না, লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে আসবে।

প্রাচ্যের পুষ্প নামে খ্যাত, নান্দনিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, ১২৮ বছরের ঐতিহ্য সমৃদ্ধ সিলেটের সবচেয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রিয় এম.সি কলেজ। জীবনের কৈশোর আর যৌবনের শ্রেষ্ঠ মূহুর্তগুলো এখানেই অতিবাহিত করেছি। ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান, অধ্যক্ষ, কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ক্যাম্পাসের নেতৃবৃন্দের সাথে স্মৃতি গুলো বার বার মনে এসে ভীড় জমায়।

গত শুক্রবার রাতে এম.সি কলেজের হোস্টেলে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে পালাক্রমে ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বারা ধর্ষণের খবর সিলেটবাসী সহ সারা পৃথিবীর মানুষকে মর্মাহত করেছে। এ যেন ঐতিহ্যের স্মারক আমার এম.সি কলেজকেই মানুষরুপী জানোয়ারেরা ধর্ষন করেছে। রাতে ঘুমাতে পারিনি। শুধু ভাবলাম, ছয়টা নরপশু মিলে একটা গৃহবধূকে জোর করে যৌন চাহিদা পূরণ করেছে এ ধরনের নজির কি পশুদের মধ্যেও চোখে পড়ে? না পড়েনা। এরা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। এই কলেজের চতুর্পাশ আজ ধর্ষক, চাঁদাবাজ আর ছিনতাইকারী দ্বারা পরিবেষ্টিত। তাদের আছে গডফাদার। এদের ছত্রছায়ায় নিয়মিত চলছে এ সমস্ত কুকর্ম। শুক্রবার রাত বারোটা পর্যন্ত গডফাদাররা আপোষের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলো। দূর্ঘটনাক্রমে মিডিয়ায় চলে আসার কারনে আমরা জানতে পেরেছি।

ছাত্রাবাসে সাধারন ছাত্রদের উপর চলতো অমানুষিক নির্যাতন। রাতের বেলা ছাত্রলীগের টর্চার সেলে তান্ডব চালাতো সাইফুর বাহিনী। ছাত্রাবাসে সিট দেয়ার নামে চলে সাধারন ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা আদায়, টাকা না দিয়ে জোর করে চলে মিল খাওয়া, বিরোধী মতের কাউকে হলে থাকতে না দেয়া বিগত হোষ্টেল আবার নতুন করে চালু হওয়ার পর এগুলো ছিলো তাদের নিত্য দিনের রুটিন ওয়ার্ক।

এরা সমাজের কীট। মানবিক সমাজে বসবাসের যোগ্যতা এদের মধ্যে নেই। এ সকল উচ্ছিষ্ট আবর্জনা ফ্লাস আউটের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী একটি বিপ্লবী আহবান। বিবেকের দংশনে নীল হয়ে আছি। এ বেঁচে থাকার কোন মানে হয়না। কলেজের সিনিয়র ভাইদের অনুরোধ করছি, আপনারা একটি বিপ্লবের ডাক দেন; আমরা প্রস্তুত আছি। আমরাই এম. সি কলেজ। আমরা নেই কোথায়? আমরা পারিনা কী? শুধু আপনারা ডাক দেন।

লেখক : জুবায়ের আহমদ, সাবেক শিক্ষার্থী, এম.সি কলেজ, সিলেট

সিএনবাংলা/জীবন

Sharing is caring!

 

 

shares