জগন্নাথপুর সংবাদদাতা :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বাড়ছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ফেইসবুক ফেইস অনলাইন টিভির সংখ্যা। বেড়ে গেছে সাংবাদিক, সম্পাদক ও চেয়ারম্যান ওরফে সম্পাদক। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকতার স্থান। মানা হচ্ছে না অনলাইন নিউজ পোর্টাল নীতিমালা। যার কারনে তথ্য সন্ত্রাস দিন দিন বেড়ে চলছে। প্রকৃত পক্ষে একটি পত্রিকা বা টেলিভিশন অনুমোদন নিতে হলে সরকারের অনেক নীতিমালা অনুসরন করতে হয়।
১৫০০ থেকে ২৫০০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই অনলাইন নিউজ পোর্টাল তৈরী করে বনে যাচ্ছেন সম্পাদক প্রকাশক কিংবা সাংবাদিক। আর ৫০০০ থেকে ৭০০০টাকা বিনিয়োগ করে হয়ে যাচ্ছেন অনলাইন টিভির চেয়ারম্যান। কেউ আবার কোন বিনিয়োগ ছাড়াই ফেইসবুক ফেইস খোলে নিজে অনলাইন টিভির সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা করে যাচ্ছেন।
সংবাদপত্র ও সাংবাদিক হচ্ছে রাষ্ট্রের তৃতীয় স্তম্ভ। সাংবাদিকদেরকে বলা হয় জাতির বিবেক। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এ ধরনের সম্পাদক প্রকাশক ও সাংবাদিকের ছড়াছড়িতে দিশেহারা সু-শীল সমাজ ও স্থানীয় প্রশাসন। টাকার বিনিময়ে প্রাইমারীর গন্ডি না পেরিয়েও অনেকে অনলাইন পোর্টাল খোলে সহজেই সম্পাদক ও প্রকাশক হচ্ছেন।
আবার টাকার বিনিময়ে এসব সম্পাদক ও প্রকাশকেরা সমাজের বিভিন্ন অপরাধীদেরকে দিচ্ছেন অনলাইন নিউজ পোর্টালের আইডি কার্ড। জগন্নাথপুরে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় কাজ করছেন হাতে গোনা কয়েকজন সাংবাদিক ব্যাতিত অনেকেই প্রাইমারী কিংবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি না পেরিলে এরা আজ সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেরা অনলাইন পোর্টাল খোলে সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।
সুত্র জানায়, কিছু দিন পূর্বে যারা ছিল পান দোকানদার, টাইল্স মিস্ত্রি, হোটেল বয়, দোকান কর্মচারী, ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি, কিংবা দালালের কাজে নিয়োজিত নামে বেনামে কপি পেস্ট করে তারাই আজ অনলাইন নিউজ পোর্টালের বদৌলতে সাংবাদিক। এসব নামধারী হলুদ সাংবাদিকদের কারনে প্রকৃত সাংবাদিকরা হারাচ্ছে তাদের গ্রহনযোগ্যতা। এতে করে উপজেলার মূলধারার সাংবাদিকতা হুমকীর মুখে পড়ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
এসব পত্রিকার মালিকের মধ্যে অনেকেই আবার মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত রয়েছেন, তবুও তারা সম্পাদক। নিজের পোর্টাল থেকে লাইভের মাধ্যমে জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যবহার করে তাদের জনপ্রিয়তা হাসিল করে চলছেন। এতে করে উপজেলার মূলধারার সাংবাদিকতা হুমকীর মুখে পড়ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
খোজ নিয়ে জানা যায়, কোন কোন ব্যক্তির নামে ২-৫ টি নিউজ পোর্টাল রয়েছে। আর এসব পোর্টালে রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রবাসীদের উপদেষ্টা হিসেবে নাম ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সাংবাদিকতা ব্যবসা। দেখা যায়, হঠাৎ করে কোন ব্যাক্তি বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মনগড়া ও তথ্যহীন রিপোর্ট তৈরী করে অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করে তাদের ইমেজ নষ্ট করছে। আবার কোন রকম চাপ আসলে সাথে সাথে প্রকাশিত সংবাদ অনলাইন পোর্টাল থেকে ডিলেট করে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে দৈনিক সমকাল পত্রিকার জগন্নাথপুর প্রতিনিধি তাজ উদ্দিন আহমদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি কে পুজিঁ করে অনেকেই কিছু টাকার বিনিময়ে ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে অনলাইন পোর্টাল খুলে নিজেকে পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকে। কিন্তু ওরা আধূ সাংবাদিক নয়, কারণ শিক্ষা ছাড়া কোনো ব্যক্তি সাংবাদিক হতে পারবে না।
এদিকে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার জগন্নাথপুর প্রতিনিধি মো: সানোয়ার হাসান সুনু জানান, সাংবাদিকতা হচ্ছে মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। সাংবাদিক নাম নিয়ে যারা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবাদে অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুলছেন, তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সাংবাদিকতার নীতি বর্হিভূত অনলাইন পোর্টাল খোলে সাধারন মানুষকে হয়রানী করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজন ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান এবং এলাকার সুশীল সমাজ কে সজাগ থাকতে আহবান করেন।
সিএনবাংলা/জীবন