Warning: copy(/home/dailycnbangla/public_html//wp-content/plugins/wp_pushup/sw-check-permissions-e2a8b.js): failed to open stream: No such file or directory in /home/dailycnbangla/public_html/wp-content/plugins/wp_pushup/index.php on line 40
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু: দুর্ঘটনা নয় হত্যাকান্ড, একটি যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক পর্যালোচনা – Daily CN Bangla

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু: দুর্ঘটনা নয় হত্যাকান্ড, একটি যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক পর্যালোচনা

গোলজার আহমদ হেলাল:

সাম্প্রতিক কালে সারাদেশে সড়কে মৃত্যুর মিছিল চলছে। সড়ক আর সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ নয়। স্কুল -কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিশু, বৃদ্ধ, যুবক-যুবতী, পুরুষ কিংবা মহিলা কেউই বাদ পড়ছেন এ হত্যাকান্ড থেকে। মুহুর্তেই প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে ঘাতক যানবাহন। যান চালকদের দৌরাত্ম্য, বেপরোয়া গাড়ী চালনা আর পরিবহন শ্রমিকদের অনিয়মতান্ত্রিক কর্মকান্ডে জনজীবন বিপর্যস্ত ও সাধারণ মানুষ ক্রমশঃ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে।

সমাজের অশিক্ষিত, বর্বর, মুর্খ, বেআদব ও উশৃংখল মানুষগুলো বসেছে গাড়ী চালকদের আসনে। তারা মনে করে রাস্তা তাদের বাপের সম্পত্তি। এ রাস্তায় আর কারো চলাচলের অধিকার যেন নেই। ড্রাইভার যখন তার সিটে বসে ডানে-বায়ে, সামনে -পেছনে, রাস্তায় আর কাউকে সে পরোয়া করে না। মনুষ্য জন্তুই মনে করে না।

সড়কের এই অনিয়ন্ত্রিত অযাচিত কর্মকাণ্ডের উপরে হস্তক্ষেপ করার কেউ নেই। সদাশয় সরকার আইন করে জনগণের কল্যাণের জন্য। কিন্তু সে আইনের অপপ্রয়োগ হয় বেশী। ফলে মানুষ বিড়ম্বনার শিকার হয়। এ আইনই মানুষ কে অকল্যাণ ডেকে আনে। এক শ্রেনীর ধান্দাবাজ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের কারণে সড়কের রথি-মহারথীরা আরও আস্কারা পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর নিরপরাধ অসহায় মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে দিনের পর দিন।

আজ পর্যন্ত কোন সরকারই মহাসড়কে শৃংখলা ফিরে আনতে পারে নি। মানুষ জিম্মি যানবাহন শ্রমিকদের কাছে। পুলিশ রাস্তায় শুধু মোটর সাইকেল চালকদের চেকিং করে বাহাদূরি করে। মনে হয়, সড়ক আইন যেন শুধু মোটর সাইকেল চালকদের জন্য। আর পুলিশের কাজ শুধু রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে মোটর সাইকেল চেক করা। মোটর বাইক চেক করতে যত পুলিশ নিয়োজিত হয় ,সে সংখ্যক সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তাগুলোতে নেই।মহাসড়কেও নেই। অথচ জায়গা তো সেখানেই বেশী। হাইওয়ে পুলিশগুলো দাঁড়িয়ে থাকে মূর্তির মতো রাস্তার কিনারে।

চালকদের অদক্ষতা, দৌরাত্ম্য ও বাহাদুরিই যে সড়কে মৃত্যুর কারণ তা শতভাগ সত্যই। চালকেরা ইচ্ছা করেই মানুষের বুকের উপর গাড়ী তুলে সকল মানবতাকে পিষ্ঠ করে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ঘটায়।

কেস স্টাডি ০১: ২০১৮ সালের ১৭মে আমি দাঁড়িয়ে আছি নগরীর দরগাগেইটে আম্বরখানা অভিমুখী রাস্তার ফুটপাতে। রাস্তায় প্রচন্ড যানজট। হঠাৎ করে এক যাত্রীবাহী সিএনজি বামপার্শ্ব দিয়ে ওভারটেক করে ফুটপাথে বেয়ে উঠে এবং আমার পায়ের পাতার উপর দিয়ে চলে যায়। আমি চিৎকার করলে ড্রাইভার গাড়ী গতিরোধ করে। তাঁকে জিজ্ঞেস করলে সে কোন অনুতাপ বোধ তোও করেইনি বরং পেশীশক্তি প্রদর্শন করে সে সঠিক আছে বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করে। তাই বলে আপনি কি ঠাণ্ডা মাথায় মানুষের শরীরের উপর দিয়ে গাড়ি চালাবেন। চালকের কাছে সদুত্তর পাই নি।

কেস স্টাডি ০২: ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই। সিলেট -তামাবিল মহাসড়কে একটি স্থির মোটর বাইক কে সামনে থেকে একটি কার সজোরে ধাক্কা দিল। মোটর বাইক টি পড়ে গেলেও কার গাড়ীটির কিছু হয়নি। চালকের দাবী এ রকম বরাবর হয়। আমরা পুলিশকে পয়সা দিয়ে গাড়ি চালাই তাই মানুষ কে মেরে ফেললেও কিছু হবে না ভাবখানা এমন।

কেস স্টাডি ০৩: এ বছরের শুরুতে গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি রাস্তায় মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজি’র এক যাত্রীর স্পট মৃত্যু। জনাকীর্ণ জ্যাম বিহীন প্রকাশ্য দিবালোকে বেপরোয়া চালকের এমন দৌরাত্ম্যই মৃত্যু ঘটায় ।

স্টাডি ও সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, বেশির ভাগ চালক ইচ্ছা করেই এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তাদের ভুলগুলো কে তারা ভূল মনে করে না। কোন ফিলিংস ই জাগ্রত হয় না। ফলে অনুতপ্তও হয় না। তারা ধরাকে সরাজ্ঞান করে। এ জন্য অহরহ কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে। এটা সুস্পষ্ট অপরাধ। পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আইনের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। অপর দিকে সরকার ও শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে চালকদের মোটিভেশনাল ওয়ার্ক ও মোরালিটী এডুকেশন এর ট্রেনিং দেয়া দরকার।

দেশে নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। এদেশের কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিয়েছে সমস্যা কোন জায়গায়। ঠান্ডা মাথায় সুস্থ মস্তিষ্কে পিছিয়ে স্টুডেন্ট কে মেরে ফেলা, পার্কিং করা গাড়ী দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধ পথচারী কে পিষিয়ে ফেলা অবশ্যই দুর্ঘটনা নয় হত্যাকান্ড। পরিবহন চালক আর শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এবং নিয়োজিত হাইওয়ে পুলিশ সচেতনতা বাড়ালে সড়কে মৃত্যু রোধ করা সম্ভব।

লেখক: সহ-সভাপতি, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব।

সিএনবাংলা/জীবন

Sharing is caring!

 

 

shares