Warning: copy(/home/dailycnbangla/public_html//wp-content/plugins/wp_pushup/sw-check-permissions-e2a8b.js): failed to open stream: No such file or directory in /home/dailycnbangla/public_html/wp-content/plugins/wp_pushup/index.php on line 40
শিশু নির্যাতন রোধে আমাদের করনীয় – Daily CN Bangla

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শিশু নির্যাতন রোধে আমাদের করনীয়

মাহমুদুল হাসান জাহাঙ্গীর :: বর্তমানে একের পর এক বীভৎস কায়দায় শিশু নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। অাইন কানুন থাকার পরও শিশুদের প্রতি নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। এই আচরণের পিছনে কাজ করছে বিচারহীনতা সংস্কৃতি। শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের কে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক ভাবেও পদক্ষেপ নিতে হবে।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে গত জুন মাসে ১ হাজার ৭৬৪টি শিশু পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৯২ শিশু। ধর্ষণ করা হয়েছে ৯ জনকে এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৯৯ জন শিশুকে যাদের মধ্যে ৮৬ জন মেয়ে। হত্যা করা হয়েছে ৪১ জনকে, অপহৃত হয়েছে ১০ জন, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে আরও ১২ জন। অন্যদিকে, মাসটিতে মোট আক্রান্ত নারীদের মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৬ জন বা ২০ শতাংশ। নারীদের শতকরা ৯৮ ভাগ অর্থাৎ ৯ হাজার ৬৯৩ জন পারিবারিক সহিংসতার শিকার। পারিবারিক সহিংসতার মধ্যে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪ হাজার ৬২২ জন। অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার ৩ হাজার ৯ জন, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ১ হাজার ৮৩৯ জন, ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৩৫ জনকে, হত্যা করা হয়েছে ১৪ জনকে এবং ত্রাণ আনতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন পাঁচজন।

সাম্প্রতিককালে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কয়েকটি শিশু নির্যাতনের ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি তা উদ্বেগজনক। মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায় এই শিশু নির্যাতনের চিত্র। আজ ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে বাংলাদেশে। আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলছে শিশু নির্যাতনের প্রবণতা। একের পর এক নির্মম এবং নিষ্ঠুরভাবে শিশু হত্যার ঘটনা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। একুশ শতাব্দীর অত্যাধুনিক সভ্য এই সমাজব্যবস্থায় শিশু নির্যাতন আমাদের মনুষ্যত্বকে আজ প্রশ্নের সম্মুখীন করছে। শিশু নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মাধ্যমে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না শিশু নির্যাতন। তাহলে এই শিশু নির্যাতনের শেষ কোথায়? কেবল আইন এবং শাস্তি দিয়ে নয় রবং মনুষ্যত্বের যথাযথ বিকাশ, নীতি নৈতিকতাবোধ জাগ্রত তথা একটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জাগরণই এই শিশু নির্যাতন রোধ করতে পারে। আর এই জন্য যথাযথ পদক্ষেপ এবং করণীয় নির্ধারণ করা আজ আমাদের সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিশুদের প্রতি করুণা নয় বরং দেশের স্বার্থেই তাদের সুস্থ সুন্দর এবং স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে হবে। এ দায়িত্ব পরিবার, সমাজ, তথা রাষ্ট্রের। শিশুর নিরাপত্তা দিতে হবে সবার আগে পরিবারকে তারপর সমাজ ও রাষ্ট্রকে। এটা নিশ্চিত করতে না পারলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে যা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক। শিশুদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তাদের কল্যাণের ব্যাপারে সরকারকে আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করা উচিত। অপার সম্ভাবনা ও স্বপ্ন নিয়ে যে শিশুর নিরাপদে বেড়ে ওঠার কথা সে কেন নির্যাতন অথবা নিষ্ঠুর হত্যার শিকার হবে? শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত করতে সবার আগে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সমাজের একশ্রেণির অমানুষের লোভ ও নিষ্ঠুরতার কারণে শিশুরা নির্যাতনের শিকার হবে, তাদের প্রাণ চলে যাবে এটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

শিশু নির্বাচন দমনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে গণসচেতনতা প্রচার দরকার। এমন কর্মকাণ্ডে মানুষের মাঝে ঘৃণ্যাবোধ জন্মাতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার কোনো বিকল্প নেই। সুশাসন না থাকলে কখনো কোনো নির্যাতন বন্ধ হওয়া সম্ভব নয়। এই অনাচারের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মানুষের বিবেক জাগ্রত করার জন্য নানা ধরনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। সমাজের বিবেকবান মানুষদের সোচ্চার হতে হবে। গানবাজনা, বিকর্ত, নৃত্য, কবিতা, নাটক, সিনেমা, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দেশের সর্বস্তরে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। সর্বস্তরে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় ও তৃণমূল পর্যায়ের সরকারি, বেসরকারি, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনগুলোকে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। শিশু নির্যাতন আইন কঠোরভাবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। শিশু নির্যাতনের জঘন্য কাজে জড়িতদের কোনো বিবেচনায় ছাড় দেয়া যাবে না। পরিত্রাণের উপায় হিসেবে ট্রাইব্যুনালে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করা দরকার। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো গতিশীলভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। শিশুদের সুরক্ষায় সরকার আর জনগণকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

লেখকঃ——সাহিত্য ও সংস্কৃতিক কর্মী ও সম্পাদক গ্রাম বার্তা

Sharing is caring!

 

 

shares