নিউজ ডেস্কঃ সমুদ্র পথে স্বপ্নের দেশ ইতালি যেতে মরিয়া কোম্পানীগঞ্জের যুবকরা। ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ ইতালি। জীবিকার তাগিদে ও উন্নত জীবন যাপনের আশায় অনেকেই মৃত্যু ঝুঁকি জেনেও পাড়ি দিচ্ছে ইউরোপের দেশ ইতালিতে। ইতালি যেতে তারা বেঁচে নিচ্ছে সাগরপথ। সাগরপথে তারা লিবিয়া থেকে ইতালি সীমানায় পৌছায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক ছদ্মনাম (রহিম মিয়া)জানান, আমার ছেলে ৪ মাস ধরে লিবিয়া আছে ইতালি যাবার আশায়। প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দালালদের সাথে কন্টাক্ট করে পাঠিয়েছিলাম কিন্তু বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বাংলাদেশ থেকে দুবাই হয়ে লিবিয়া থেকে নদীপথে ইতালি পৌছানোর কন্ট্রাক্ট। কিন্তু লিবিয়ার স্থানীয় দালালচক্র(মাফিয়া) হাতে আটক হলে আবার দিতে হয় ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি, আমার ছেলেকে দালালরা ফুসলিয়ে এই পথে নিয়ে গেছে।সর্বশেষ তথ্যে ৪/৫ বছরে কোম্পানীগঞ্জ থেকে প্রায় ২০০ মানুষ ইতালির উদ্দেশ্য পাড়ি দিয়েছেন। এরমধ্যে কিছু রয়ে গেছে লিবিয়ায়,বেশিরভাগ চলে গেসে ইতালিতে। তাদের মধ্যে সিংহভাগ যুবক ও মধ্যবয়সী, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪৫ পর্যন্ত। যাদের অধিকাংশ বেকার ও অশিক্ষিত যুবক। বর্তমানে কোম্পানীগঞ্জের প্রায় ২০/২৫ জন ৩/৪ মাস ধরে লিবিয়া আছে সমুদ্র পথে ইতালি যাবার অপেক্ষায়। কিন্তু তারা কি পারবে সমুদ্র পথে ইতালি পৌছাতে সে আশায় দিনপাত করছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থেকে যাওয়া একটা বহরে ৭/৮ জন যুবকের একটা টিমকে সমুদ্র পথে পাঠানোর প্রস্তুতির সময় দালাল চক্রের মাধ্যমে স্থানীয় মাফিয়া চক্র ধরলে ৪ জনকে ৬ দিন পর জনপ্রতি প্রায় ৩ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনলেও, ৩/৪ জন রয়ে গেছে এখনও আটক। তাদের সাথে পরিবার কোনধরনের যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারছে না। (সাদেক) মিয়া ছদ্মনামের এক অভিভাবক জানান,৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা কন্টাক্ট করে ইতালি যাবার উদ্দেশ্য পাঠায়। কিন্তু বর্তমানে আমি ওই টাকা দিবার পরেও দুই দফা জমি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখনও ছেলে লিবিয়া আছে, জানিনা ইতালি পৌছাতে পারবে কিনা।
উল্লেখ্য প্রায় ২ মাস আগে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার লম্বাকান্দি গ্রামের ১ যুবক সাগর পথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাবার সময় নৌকা ডুবে মারা যায়। কোম্পানীগঞ্জ প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমদ আবির (ইতালি প্রবাসী) জানান,অবৈধভাবে সমুদ্র পথে ইতালি যেতে রয়েছে মৃত্যু ঝুঁকি। তাই সকলের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ থাকবে জেনে বুঝেশুনে এভাবে ইতালি আসবেন।