Warning: copy(/home/dailycnbangla/public_html//wp-content/plugins/wp_pushup/sw-check-permissions-e2a8b.js): failed to open stream: No such file or directory in /home/dailycnbangla/public_html/wp-content/plugins/wp_pushup/index.php on line 40
সাম্য,মানবিকতা ও সুবিচারপূর্ণ সমাজ গঠনই হোক মহান বিজয়ের মুলমন্ত্র – Daily CN Bangla

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাম্য,মানবিকতা ও সুবিচারপূর্ণ সমাজ গঠনই হোক মহান বিজয়ের মুলমন্ত্র

গোলজার আহমদ হেলাল: আজ বাংলাদেশের বিজয়ের ৪৯ বছর।১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পায় বাংলাদেশ।বাংলাদেশের শৌর্য, বীর্য ও প্রমত্ততা এ মাটির সে সকল সূর্যসন্তানদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ও জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্বলকে ধূলিসাৎ করে আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশকে স্বাধীন করেছিল।পাকিস্তানী শোষণ নিপীড়ন থেকে দেশবাসী কে মুক্ত করেছিল।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস।জাতীয় ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় দিন।বাঙালী জাতির মহান বিজয়ের গৌরবময় এক অধ্যায় ।এ বিজয় গৌরবের,অহংকারের এবং বাঙালী জাতির আত্মপরিচয়ের।১৯৭১ সালের এ দিনে আমরা অর্জন করেছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ,পেয়েছি লাল সবুজের একটি পতাকা।বিশ্বের বুকে স্থান পেল একটি মানচিত্র -বাংলাদেশ।
মহান বিজয় দিবস বাংলাদেশে বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র পালন করা হয়। প্রতি বছর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। ২২ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারীভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
আমরা গত ৪৯ বছরে দেশের উন্নয়ন ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রকল্পে নিজেদের দেশ ও নাগরিকদের কৃতিত্ব নিয়ে গর্বিত। শ্রম ও মেধার বিনিময়ে বাংলাদেশের এই উন্নয়নের পেছনে আছে দেশের প্রতিটি নাগরিকের অবদান। কৃষক, মাঝি, দিনমজুর থেকে শুরু করে শিক্ষক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল পেশার জনগণ। দেশের উন্নয়নে কেউ ছোট নন, সবাই সমান। এমনকি প্রবাসে প্রবাসীদের মূল পরিচয় একজন বাংলাদেশি হিসেবে। তারাও বিভিন্নভাবে তাদের আবিষ্কার, বিশ্বাস ও কর্মের মাধ্যমে দেশের সুনাম বয়ে আনছেন। তারা দেশকে গর্বের আরেক ধাপ উঁচুতে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করছেন।
বাংলাদেশি অধিকাংশ নাগরিক যখন উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে উন্নত একটি দেশে রূপান্তরিত করার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পরিশ্রম ও মেধার সুষ্ঠু ব্যবহার করতে ব্যস্ত, ঠিক তখন একদল মানুষ বিভিন্নভাবে নিজেদের অন্ধকার মনের হিংসা ও পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনায় ব্যস্ত। তারা কারা? তারা শুরু থেকেই দেশ স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক। স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্ত বাতাসে জীবনযাপন করলেও তাদের মনের কালিমা তারা দূর করতে সক্ষম হয়নি। যদিও তাদের আর অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তবুও তারা করছে তাদের কুৎসিত মনের বহিঃপ্রকাশ। তারা কৃতঘ্ন।
আবার স্বাধীনতার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যারা দেশকে স্বাধীন করেছেন তাদের অবদানের সঠিক ইতিহাস তারা গোপন করে তাদের অনুসারীদের ভুল তথ্য দিচ্ছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়শীল স্বাধীন দেশের জন্য এরা বড় শত্রু। স্বাধীনতার ইতিহাস না জানা এই নতুন প্রজন্মকে ভুল পথ থেকে সঠিক পথে আনার দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্র ও দেশের সচেতন নাগরিকদের। সচেতন নাগরিক হিসেবে সেটা করতে পারেন আপনিও। তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে প্রথমে তাদের জানাতে হবে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস। তারপর তাদের দিতে হবে বেঁচে থাকার জন্য সুস্থ পরিবেশের নিশ্চয়তা।
আমরা জানি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনটি মূলনীতি কে সামনে রেখে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিল। স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে উল্লেখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ও সুবিচার ই হল মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূল মন্ত্র। বিজয়ের উনপঞ্চাশ পেরোলেও মানুষের মুখে আমরা এখন ও হাসি ফুটাতে পারি নি। এদেশের নিরীহ মানুষের সামনে আমরা সোনার বাংলা, সবুজ বাংলা ও নতুন বাংলা গড়ার শ্লোগান দিয়েছি কিন্তু সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে পারি নি।
সমৃদ্ধ এবং দুর্নীতি, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকার কাজ করছে। কিন্তু পুরোপুরি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা এখানে নেই। বিরোধী দল, মত ও পথকে স্পেস না দিয়ে জটিল রাজনীতির অধরায় প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। এটা একটি অশনি সংকেত। ৪৯তম বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে আমরা যদি সবাই অন্তত একজন করে নাগরিকের মধ্যে দেশপ্রেম বোধ জাগ্রত করতে পারি এবং রাষ্ট্র সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কার্যক্রম চালাতে পারে, তবে আমার, আপনার, সকলের সোনার বাংলা কলুষমুক্ত, উন্নত দেশের তালিকায় পৌঁছতে পারবে খুব দ্রুত। এ জন্য দরকার আমাদের প্রবল ইচ্ছাশক্তি। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের সঠিক ইতিহাস জানার আগ্রহ, মনেপ্রাণে দেশপ্রেম জন্মানোর ইচ্ছে ও যুক্তিযুক্ত দাবিতে সোচ্চার হওয়ার মতো মনোবল।
আসুন দেশের জন্য সবার মধ্যে আর কিছু না হলেও অন্তত দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলি। দেশকে ভালোবাসি। এটা হোক বিজয়ের ৪৯বছরে দেশের জন্য আমাদের উপহার।স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত মহান মুক্তিযুদ্ধের তিন মুলনীতি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগণের জন্য আমরা কাজ করি।

Sharing is caring!

 

 

shares