এইচ.এম.তৌহিদ : নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লি আলা রাসুলিহিল কারীম।
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ,
আসসালামু আলাইকুম।বর্তমান সমাজে ইসলাম প্রিয় মানুষেরা নামাজ,ইবাদত করছে ঠিকই, কিন্তু এর পিছনে ইসলাম ধর্মের মৌলিক এমন কিছু বিষয় রয়ে যাচ্ছে যেগুলো ছাড়া হাশরের ময়দানে বেহেশতের ফয়সালা পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাবে।সেগুলো মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মানুষের সাথে প্রতারণা করা/মানুষকে ঠকানো।আসুন জেনে নেই পবিত্র কোরআন ও হাদিস এই ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহকে কি নির্দেশ প্রদান করে।
সুপ্রিয় মুসলিম ভাই-বোনেরা,
ইসলাম কোনো ধরনের অন্যায় কাজকে অনুমোদন করে না। বিশেষ করে যারা মানুষকে ঠকায়, তাদের ব্যাপারে কোরআন ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা জঘন্য অপরাধ। ধোঁকাবাজরা তাদের অপকর্মের মাধ্যমে শুধু অপরকেই প্রতারিত করে না নিজেদেরও এই অপরাধ বলয়ের মধ্যে জিম্মি করে ফেলে।
পবিত্র কোরআনে— আল্লাহ ঘোষণা করেন— ‘ধোঁকা ধোঁকাবাজদেরই ঘিরে ফেলে।
’— সূরা ফাতির-৪৩।
যারা প্রতারণা বা ধোঁকাবাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের যে পরিণাম ভয়াবহ তা স্পষ্ট করা হয়েছে হাদিসের বর্ণনায়।
নবী পাক (সা.) বলেন, ‘ধোঁকাবাজ ও প্রতারক জাহান্নামি— বাযযার।
রসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘প্রবঞ্চক বেহেস্তে যেতে পারবে না। কৃপণ এবং অনুগ্রহ খোটাদানকারীও নয়। ’—তিরমিযি।
যারা প্রতারণা করে, তারা আসলে নিজেদেরই প্রতারিত করছে। সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথে না গিয়ে অসত্য, অসুন্দর ও অকল্যাণের ঘৃণ্য পথে তারা হাবুডুবু খায়। তারা যা করছে তা যে জঘন্য অপরাধ, এগুলো যে কবিরা গুনাহের কাজ সে সম্পর্কে তারা অভিহিত। তারপরও তারা সাময়িক লাভের জন্য মানুষকে ঠকানোর কাজে জড়িত হয়। নিজেদের পাপকর্মে জড়িয়ে তারা আল্লাহ প্রদত্ত কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করছে।
আল্লাহতায়ালা প্রতারণা-ধোঁকাকে মোনাফেকি চরিত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘তারা (মোনাফেকরা) আল্লাহর সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে, আসলে তারাই প্রতারিত হচ্ছে। ’
ইমাম ওয়াহেদী (রহ.) বলেন, যারা প্রতারণা করে, তারা মোনাফেকদেরই কর্ম করে। বিশ্বাসী মুমিনদের আল্লাহ যেমন নূর বা আলো দান করবেন, অনুরূপ তাদেরও দেওয়া হবে। কিন্তু তারা যখন পুলসিরাতে আরোহণ করবে তখন তা নিভে যাবে। ফলে তারা অন্ধকারে তলিয়ে যাবে।
রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ব্যক্তি জাহান্নামি হবে, তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে— যে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাবস্থায় মানুষকে ধোকা দেয়। ’— মুসলিম।
রসুল (সা.)-এর উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে প্রতারক ও ধোঁকাবাজদের জাহান্নামের বাসিন্দা হওয়ার দুর্ভাগ্য অর্জন করতে হবে। ধোঁকাবাজির মাধ্যমে মানুষকে কষ্ট দিয়ে তাদের বিপদে ফেলে সাময়িকভাবে লাভবান হলেও সে লাভের পরিণতি ভয়াবহ।
আল্লাহ আমাদের ধোঁকাবাজির/প্রতারণার ফাঁদ থেকে দূরে থাকার ও মানুষের কাছে বিশ্বস্ত হওয়ার তওফিক দান করুন। কাল হাশরের ময়দানে আমরা যেনো এসব ইসলাম বিদ্বেষী কাজের জন্য কাটগড়ায় দাড়াতে না হয় সেই পথে চলার চেষ্টা করি।আমিন।